ছাতক প্রতিনিধঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকে রেলওেয়ের কংক্রিট স্লিপার প্লান্টে আবারো শুরু হয়েছে দূর্নীতির মহোৎসব। রেলওয়ের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কনস্ট্রাকশনের নামে এ প্লান্টে হরিলুট চালিয়ে যাচ্ছেন। অনিয়ম ও দূর্ণীতির কারণে দেশের একমাত্র সরকারি এ কংক্রিট স্লিপার কারখানাটি উৎপাদন থেকে বার-বার মুখ থুবড়ে পড়ছে। ১৯৮৮ সালের ২৭ অক্টোবর দৈনিক ২৬৪ স্লিপার উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে ছাতকে কংক্রিট স্লিপার কারখানাটি উৎপাদন শুরু করে। ২০০০ সাল পর্যন্ত টানা উৎপাদনে ছিলো এ কারখানাটি। এরপর থেকেই অনিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে এটির উৎপাদন বার-বার বন্ধ হয়ে পড়ে। ২০১২, ২০১৪, ২০২০ সালসহ বেশ কয়েক বার কারখানাটি চালু করা হলেও এর স্থায়িত্ব বেশিদিন ঠিকেনি। কিছুদিন চালু থাকার পর তা আবারো বন্ধ হয়ে পড়ে। যান্ত্রিক ত্রুটি, কাঁচামাল সঙ্কটসহ নানা অজুহাতে বছরের বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে বাংলাদেশ রেলওয়ের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাতক কংক্রিট স্লিপার প্লান্ট। মাঝে-মধ্যে কংক্রিট স্লিপার প্লান্ট চালুর উদ্যোগ নিয়ে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিভিন্ন টেন্ডার আহ্বান করা হয়। আর এসব টেন্ডার নিয়েই ঘটে লংকাকান্ড। রেলওয়ের কর্মকর্তারা এসব টেন্ডার নিজেদের লোকের নামে নিয়ে শুরু করেন লুটপাট। এবার টেন্ডার ছাড়াই চলছে কাজ। রেলওয়ে কর্মকর্তারা নিজেই বলতেছেন আগে কাজ পরে টেন্ডার হবে। এটা যেনো নিজস্ব সম্পত্তি। বর্তমানে বিশ্বাস কনস্ট্রাকশন স্লিপার তৈরির টেন্ডার পেলেও তারা ৬০ হাজারের মতো স্লিপার উৎপাদন করার পর আবারো মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে উৎপাদন আবারো বন্ধ হয়ে পরে। ৩-৪ বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কংক্রিট মিক্সার মেশিন, ডিমুলিংসহ বিভিন্ন মেশিন মেরামত করা হচ্ছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করাচ্ছে রেলওয়ে স্টাফ (ট্রিয়েলার) আমির হোসেন, আবু বক্কর, মানিক মিয়া, সৈয়দ আহমদের দ্বারা সংস্কার করে রং-বার্নিশ করে রেখেছেন। নতুন বলেই এটিকে চালিয়ে দিয়ে হজম করার চেষ্টায় আছেন অসাধু কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে সিলেট রেলওয়ে উপ-বিভাগের সিনিয়র সহকারী নির্বাহী প্রকৌশল, সৈয়দ আজমাঈন মাহতাব বলেন, ব্রিটিশ আমলের এ মেশিন কয়েকদিন চলার পরেই বন্ধ হয়ে যায়। উৎপাদনের টেন্ডার পেয়েছে বিশ্বাস কনস্ট্রাকশন, তারা নিজেদের উদ্যোগে সমস্থ নষ্ট মেশিন মেরামত করতেছে। মেরামত কাজের কোনো টেন্ডার হয়নি। রেলওয়ে স্টাফ তাদের কাজ রেখে সেখানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ কিভাবে করে জানতে চাইলে তিনি বলেন হয়তো তারা সেখানে হেল্প করতে গেছিলো, সেখানে তারা কাজ করে এ বিষয় আমার জানা নেই। বিশ্বাস কনস্ট্রাকশনের এমডি আশরাফ হোসেন বলেন, কংক্রিট স্লিপার উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় আমরা টুকিটাকি মেশিন মেরামত করতেছি, সেটাও আমাদেরকে টেন্ডারের মাধ্যমে বিল পাস করিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তরা। আমরা শুধু মিক্সার মেশিন, ডিমুলিং এর ছোটখাটো মেরামতের কাজ করতেছি। বাকি ব্রাঞ্চের কাজ ঠিকাদার স্বপন করতেছে। এ বিষয়ে ঠিকাদার স্বপনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি কোনো মেরামতের কাজ করাচ্ছি না।