হুমায়ূন কবীর ফরীদি, স্টাফ রিপোর্টারঃ
জগন্নাথপুরে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বেশ কয়েকটি গ্রামীণ সড়ক পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। শতাধিক গ্রামের মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। জনসাধারণের মাঝে বন্যা আতংক বিরাজ করছে।
ভারী বর্ষন আর উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা, নলজুর,রত্না ও ডাউকা নদী সহ বিভিন্ন নদ-নদী ও হাওরে পানি বেড়েই চলছে।এমনকি কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ইতিমধ্যে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের শতাধিক গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। বাড়িঘর,স্কুল প্রাঙ্গন ও রাস্তা-ঘাট পানির নীচে তলিয়ে গেছে। ৯ ই জুন রোজ রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ও জানাযায়, বৃষ্টি আর ঢলের পানিতে এই উপজেলার পাটলী ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত কেশবপুর -এরালিয়া বাজার সড়ক, রসুলগঞ্জ -লাউতলা-ঝিগলী সড়ক, জগন্নাথপুর পৌর শহরের নলজুর নদীর উপর বিকল্প সেতুর এপ্রোচ সড়ক, উপজেলার জগন্নাথপুর -বেগমপুর সড়ক, আশারকান্দী ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত দাওরাই -পাঠকুড়া সড়ক, কলকলিয়া ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত বালিকান্দী - কলকলিয়া বাজার সড়ক ও যোগলনগর পয়েন্ট - জাউয়া বাজার সড়ক সহ গ্রামীণ বহু সড়ক পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এতে করে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনসাধারণকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও জগন্নাথপুর পৌর এলাকার যাত্রাপাশা,শেরপুর, ভবানীপুর ও উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়ন এর কান্দারগাঁও, নোয়াগাঁও, কামারখাল, বালিকন্দী, গলাখাই,জগদীশপুর, শ্রীধরপাশা, সনুয়াখাই, ফরিদপুর, পাইলগাঁও ইউনিয়ন এর আলাগদি,জালালপুর, খানপুর, আলীপুর,পাটলী ইউনিয়ন এর সেচানী,ইসলামপুর, রানীগঞ্জ ইউনিয়ন এর রানীনগর, নোয়াগাঁও, রানীগঞ্জ বাজার, আলমপুর, রৌয়াইল, চিলাউড়া- হলদিপুর ইউনিয়ন এর ভূরাখালী, দাসনোয়াগাঁও, গাদিয়ালা, বেতাউকা, বেরী সহ নিম্নাঞ্চল এর শতাধিক গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনের বারান্দায় ও আঙ্গিনায় পানি উঠেছে। অত্রাঞ্চল এর বাড়ীর আঙ্গিনা ছৌই ছৌই পানি। তমধ্যে অনেক এর বাড়ীতে পানি উঠায় আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রয়োজনীয় কাজে বাড়ীর বাহির হতে পানি মাড়িয়ে পায়ে হেঁটে সড়কে ও নৌকা যোগে চলাচল করছেন পানি বন্দী জনসাধারণ।
এ ব্যাপারে উপজেলার সাহেল মিয়া, খায়রুল ইসলাম ও রবিন দাস সহ একাধিক ব্যক্তি একান্ত আলাপকালে বলেন, আমাদের এলাকায় অর্থাৎ উল্লেখিত এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। অনেকেই আত্মীয় স্বজন এর বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েন। গ্রামীণ সড়ক পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে ভীষণ সমস্যা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল-বশিরুল ইসলাম মুঠোফোনে একান্ত আলাপকালে বলেন, গতকাল এর যে পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আশ্রয় কেন্দ্রের ব্যবস্থা সহ জরুরী যোগাযোগ এর জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এখনো কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেননি। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনিক ভাবে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।