সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের মোঃ আলী নুরের ছেলে ফয়সল আহমদকে লিবিয়া হয়ে ইটালী পাঠানোর কথা বলে মানব পাচারকারী প্রতারক নিজাম নুর ও তার আপন সহোদর মিজানুর কর্তৃক ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তাদের দ্রæত গ্রেফতার করে শাস্তির পাশাপাশি টাকাগুলো উদ্ধারের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ভূক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসির আয়োজনে হরিপুর প্রাইমারী স্কুলের সামনের রাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন ক্ষতিগ্রস্থ মোঃ আলী নুর,মোঃ চাঁন মিয়া,তৈয়বূর রহমান,গুলেনুর মিয়া,সুরুজ আলী,শাহ আলম,আছব্বির,কামরুল ইসলাম,আব্দুল কাইয়ূম ও আবুল বশর প্রমুখ।
বক্তারা বলেন জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউপির ছেলাইয়া মাহমুদপুর গ্রামের মিরাস আলীর পূত্র মানব পাচারকারী নিজাম নুর ও তার ভাই মিজানুর প্রায় দেড়বছর পূর্বে হরিপুর গ্রামের গরীব অসহায় দিনমুজুরের ছেলে ফয়সলকে লিবিয়া হয়ে ইটালী পাঠাবে বলে ৫ লাখ টাকা নেয়। তিনি দারদেনা ও চড়াসুদে টাকাগুলো এনে উপস্থিত গ্রামের গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে টাকাগুলো নিজাম নুরের হাতে তুলে দেন। টাকা নেওয়ার পর থেকে প্রতারক নিজাম নুর আজ নয় কাল বিদেশ পাঠানো হবে বলে এভাবে সময় কালক্ষেপন করলে তাদের মনে সন্দেহ জাগে। এছাড়াও এই প্রতারক নিজাম নুর ইতিমধ্যে উপজেলার বেশ কয়েকজনকে বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে বিপুল পরিমান টাকা নিয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছে বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের।
এ ঘটনায় হরিপুর গ্রামের মোঃ আলী নুর বাদি হয়ে গত ২১ জুন ২০২৪ইং তারিখে ছেলাইয়া মাহমুদপ্রর গ্রামের প্রতারক নিজাম নুর ও তার পিতা মিরাশ আলীকে অভিযুক্ত করে জামালগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে প্রতারক নিজাম নুর ফেকুল মাহমুদপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের ইনচার্জ হিসেবে রীতিমতো বেতন ভাতা উত্তোলন করে নিলে ও এলাকার একাধিক মানুষের নিকট হতে বিদেশ পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত কওে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপনে থাকার ফলে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়াতে এলাকার রোগীরা প্রতিদিন এই ক্লিনিসে এসে সেবা না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন নিজ বাড়িতে।
এ ব্যাপারে নিজাম নুরের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) দিলীপ কুমার দাসের সাথে ফোনে একাধিকার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা.আহমদ হোসেন জানান,ফেকুল মাহমুদপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের ইনচার্জ হয়ে যেহেতু নিজাম নুর দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত তাকে সোকজ করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ও তিনি জানান।
এদিকে মানববন্ধনকারীরা অবিলম্বে এই প্রতারক মানব পাচারকারী নিজাম নুর ও তার পিতা মিরাস আলীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি আত্মসাতকৃত টাকাগুলো উদ্ধারের জন্য বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ও প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান।