কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
অতিরিক্ত বৃষ্টি আর ভারতের উজানের পাহাড়ী ঢলে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় ৩২০টি দ্বীপচর ও ৯ উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ধরলা অববাহিকার প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
প্লাবিত এলাকার ঘর-বাড়ি ও মৌসুমি ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গ্রামীণ সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। চারিদিকে পানি থাকায় দূর্ভোগে পরেছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন ও গৃহপালিত পশুরা। বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় চৌকি কিংবা উঁচু মাচায় অবস্থান করার পাশাপাশি অনেক পরিবার উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি জানায়, আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ব্রহ্মপুত্র নদের হাতিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার সমান্তরাল রয়েছে।
মোগলবাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিলন জানান, ধরলার পানি আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় চর সিতাইঝাড় প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাবলু জানান, বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর বালাডোবা, বতুয়াতলি মূসার চর, ব্যাপারিপাড়া নতুন চর এবং পূর্ব ও পশ্চিম মশালের চরের শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। বাধ্য হয়ে এসব পরিবারের অনেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
সিভিল সার্জন অফিস জানায়, বন্যার্তদের জন্য ৮৫টি মেডিকেল টিম বিশুদ্ধ খাবার পানি ও ঔষধ সরবরাহ করছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা ত্রাণ সহায়তা বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। বন্যা কবলিত কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, উলিপুর ও নাগেশ্বরীতে খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি ইতোমধ্যে দুর্গত এলাকায় এক হাজার ২০০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল, ১ কেজি ডাল, ১ লিটার তেল ও ১ কেজি লবণসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ৯ উপজেলায় ৪ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।