সুুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমী-২০২৩ পুরস্কারে ভূষিত বাউল মো. নেসারুদ্দিনকে মধ্যনগর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার(২জুলাই) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অস্থায়ী কার্যালয়ে বাউল মো. নেসারুদ্দিনের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ইউএনও অতীশ দর্শী চাকমা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মো.ইউনুস মিয়া,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জনাব প্রবীর বিজয় তালুকদার, চামরদানী ইউপি চেয়ারম্যান জনাব আলমগীর খসরু, যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান সোহাগ, গণমাধ্যম কর্মী অমৃত জ্যোতি রায় সামন্ত, অনুপ তালুকদার অভি, বাউল নেসারউদ্দীনের গানশিষ্য রিপন সরকার, মো. জুয়েল মিয়া, মো. সাইদুর মিয়া প্রমূখ।
লোকসংস্কৃতি ক্যাটাগরিতে জেলা শিল্পকলা একাডেমী ২০২৩ পুরস্কারে ভূষিত বাউল মো. নেসারুদ্দিন একজন নিভৃতচারী লোকসঙ্গীত শিল্পী।
জানা যায়, মাত্র নয় বছর বয়সে পারিবারিকভাবে পিতার হাত ধরেই সংগীতে হাতেখড়ি। ইংরেজ আমলে তার পিতা হোসেন আলী হাওরাঞ্চলের একজন নামকরা বাউল শিল্পী ছিলেন। পিতার হাত ধরে সংগীতের ভুবনে প্রবেশ করে সুদীর্ঘ ৭০ বছর ধরে বাউল গান চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।স্বভাবগতভাবে একজন প্রচারবিমুখ মানুষ। তিনি অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুর করেছেন। বর্তমানে তার গানগুলো শিষ্যরা বিভিন্ন স্থানে বাউল গানের আসরে গাইছেন।
মধ্যনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের সোমেশ্বরী নদীর পাড় ঘেঁষা মাছিমপুর গ্রামে নিভৃতচারী মানুষ বাউল মো. নেসারুদ্দিন ১৯৩৮ সালের ৫ জুলাই বাউল হোসেন আলী ও ছালেমা খাতুনের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি পাশের কান্দাপাড়া গ্রামের খালেক মুহুরীর মেয়ে শামীমা নুরীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর স্ত্রীও একজন সংগীতশিল্পী।দাম্পত্য জীবনে তিনি দুই ছেলে ও তিন মেয়ের জনক। ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরা যার যার অবস্থানে সংসারের জীবিকা জোগাতে ব্যস্ত।
বাউল মো. নেসারুদ্দিন জানান, তাঁর বাবা একজন বাউল শিল্পী হওয়ার সুবাধে ছোটবেলা থেকেই তিনি পারিবারিকভাবেই সংগীতের সাথে জড়িয়ে পড়েন। বাবার কাছে বাউল গানের দীক্ষা লাভ করেন। তাঁর বাবাই তার সংগীতের গুরু। শিষ্য হিসাবে বাবা হোসেন আলীর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাউল গান, শরিয়ত, মারিফত, পালাগান, জারিগান আয়ত্ত করেন। সেই থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বাউল গানের আসরে এসব গান গেয়েছেন।তবে তিনি স্বরচিত গানের পাশাপাশি গীতিকার জালাল উদ্দীন খাঁর গান বেশি গান।
তিনি আরও জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল সময়ে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন। বর্তমানে বয়সের ভারে দূরে গিয়ে আসরে গান গাইতে পারেন না। সারাদিন তিনি বাড়িতে অবস্থান করেন।তবে অবসর সময়ে সুযোগ পেলেই বেহালা হাতে শুরু হয় তাঁর সংগীত সাধনা।