Sylhet 6:57 pm, Monday, 23 December 2024

মধ্যনগর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারকালে ৩৯ লক্ষ টাকার সুপারী সহ আটক ৩

মধ্যনগর(সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ২৬০ বস্তা সুপারীসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ধর্মপাশা থানা পুলিশ।
বুধবার(৬মার্চ) ধর্মপাশা থানার এসআই মোঃ আমিনুর রহমান ও এএসআই মোঃ মনিরুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে ২৬০ বস্তা সুপারী ও ১টি কাভার্ডভ্যানসহ ৩ চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ধর্মপাশা থানার বৌলাম গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. ইয়াসিন (২৪), জামালপুর দেওয়ানগঞ্জ থানার চরখারমা গ্রামের মৃত তোফাজ্জলের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম (৩০), লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভবানিগঞ্জ গ্রামের মৃত নুরুল আমীনের ছেলে মো. মাহমুদ হাসানা অপু (২৭)।
বুধবার (৬ মার্চ ২০২৪ খ্রি.) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধর্মপাশা থানাধীন নওধার গ্রামস্থ বাদশাগঞ্জ থেকে মধ্যনগর থানা গামী রাস্তার উপর এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ১টি কাভার্ডভ্যানে করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত সুপারি পরিবহন করছিল। তাদের কাছে থাকা কাভার্ডভ্যানটি তল্লাশি করে ১৩ হাজার কেজি (২৬০ বস্তা) সুপারীসহ কার্ভাটভ্যানটি জব্দ করা হয়। উদ্ধারকৃত সুপারীর আনুমানিক বাজার মূল্য ৩৯ লক্ষ টাকা।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামিরা জব্দকৃত সুপারি আমদানি সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারে নাই। আসামীরা বাংলাদেশে আমদানিকৃত সুপারি মধ্যনগর উপজেলার মহিষখলা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ভারতে চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পাচারের উদ্দেশ্যে পরিবহন করায় তাদের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, মধ্যনগরের ভারতীয় সীমান্তবর্তী মহিষখলা এলাকা এখন চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত হয়েছে। ওই এলাকায় একাধিক পয়েন্ট দিয়ে দুই দেশের চোরাকারবারিদের যোগসাজশে প্রায় প্রতিদিনই অবৈধভাবে ভারতীয় পরু, মহিষ, চিনি, কসমেটিক সামগ্রীর সাথে ইয়াবা, গাঁজা, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, বিয়ার, হুইস্কি বাংলাদেশে আনা হয়। অপরদিকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত সুপারি পাচার করা হয় ভারতে।
স্থানীয় সচেতন মহল জানান, সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি)’র সাংগঠনিক দূর্বলতার কারনেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা মধ্যনগর সীমান্তের চোরাচালান। এছাড়াও এসব অবৈধ চোরাচালানের সিন্ডিকেটের সাথে স্থানীয় সরকারী দল ও বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী কতিপয় নেতা, কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও এখন ওপেন সিক্রেট। এজন্য পুলিশ প্রশাসন চোরাচালান বন্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পরেও মাঝে-মধ্যে চিনি ও কিছু মাদকদ্রব্য, কসমেটিক আটক করলেও গরু-মহিষের চোরাচালান বাণিজ্য বরাবরই অধরা থাকছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, ভারত থেকে পাচারের জন্য গরু ও মহিষ রাতের আঁধারে বাংলাদেশের ভূখন্ডে পৌঁছা মাত্রই স্থানীয় গবাদিপশুর হাটের ইজারাদার নির্ধারিত টাকার বিনিময়ে ওইসব ভারতীয় পশুর জন্য তাদের হাটে ক্রয় সংক্রান্ত পাকা রশিদ তৈরি করে দেন। আর ওই রশিদ হাতে পেয়ে ভারতের গরু-মহিষ হয়ে যায় বাংলাদেশী, চোরকারবারী হয়ে ওঠেন বৈধ মালিক।

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাতকে রেলওয়ের কংক্রিট স্লিপার প্লান্টে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

মধ্যনগর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারকালে ৩৯ লক্ষ টাকার সুপারী সহ আটক ৩

প্রকাশের সময় : 08:54:32 pm, Thursday, 7 March 2024

মধ্যনগর(সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ২৬০ বস্তা সুপারীসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ধর্মপাশা থানা পুলিশ।
বুধবার(৬মার্চ) ধর্মপাশা থানার এসআই মোঃ আমিনুর রহমান ও এএসআই মোঃ মনিরুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে ২৬০ বস্তা সুপারী ও ১টি কাভার্ডভ্যানসহ ৩ চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ধর্মপাশা থানার বৌলাম গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. ইয়াসিন (২৪), জামালপুর দেওয়ানগঞ্জ থানার চরখারমা গ্রামের মৃত তোফাজ্জলের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম (৩০), লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভবানিগঞ্জ গ্রামের মৃত নুরুল আমীনের ছেলে মো. মাহমুদ হাসানা অপু (২৭)।
বুধবার (৬ মার্চ ২০২৪ খ্রি.) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধর্মপাশা থানাধীন নওধার গ্রামস্থ বাদশাগঞ্জ থেকে মধ্যনগর থানা গামী রাস্তার উপর এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ১টি কাভার্ডভ্যানে করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত সুপারি পরিবহন করছিল। তাদের কাছে থাকা কাভার্ডভ্যানটি তল্লাশি করে ১৩ হাজার কেজি (২৬০ বস্তা) সুপারীসহ কার্ভাটভ্যানটি জব্দ করা হয়। উদ্ধারকৃত সুপারীর আনুমানিক বাজার মূল্য ৩৯ লক্ষ টাকা।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামিরা জব্দকৃত সুপারি আমদানি সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারে নাই। আসামীরা বাংলাদেশে আমদানিকৃত সুপারি মধ্যনগর উপজেলার মহিষখলা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ভারতে চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পাচারের উদ্দেশ্যে পরিবহন করায় তাদের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, মধ্যনগরের ভারতীয় সীমান্তবর্তী মহিষখলা এলাকা এখন চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত হয়েছে। ওই এলাকায় একাধিক পয়েন্ট দিয়ে দুই দেশের চোরাকারবারিদের যোগসাজশে প্রায় প্রতিদিনই অবৈধভাবে ভারতীয় পরু, মহিষ, চিনি, কসমেটিক সামগ্রীর সাথে ইয়াবা, গাঁজা, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, বিয়ার, হুইস্কি বাংলাদেশে আনা হয়। অপরদিকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত সুপারি পাচার করা হয় ভারতে।
স্থানীয় সচেতন মহল জানান, সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি)’র সাংগঠনিক দূর্বলতার কারনেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা মধ্যনগর সীমান্তের চোরাচালান। এছাড়াও এসব অবৈধ চোরাচালানের সিন্ডিকেটের সাথে স্থানীয় সরকারী দল ও বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী কতিপয় নেতা, কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও এখন ওপেন সিক্রেট। এজন্য পুলিশ প্রশাসন চোরাচালান বন্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পরেও মাঝে-মধ্যে চিনি ও কিছু মাদকদ্রব্য, কসমেটিক আটক করলেও গরু-মহিষের চোরাচালান বাণিজ্য বরাবরই অধরা থাকছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, ভারত থেকে পাচারের জন্য গরু ও মহিষ রাতের আঁধারে বাংলাদেশের ভূখন্ডে পৌঁছা মাত্রই স্থানীয় গবাদিপশুর হাটের ইজারাদার নির্ধারিত টাকার বিনিময়ে ওইসব ভারতীয় পশুর জন্য তাদের হাটে ক্রয় সংক্রান্ত পাকা রশিদ তৈরি করে দেন। আর ওই রশিদ হাতে পেয়ে ভারতের গরু-মহিষ হয়ে যায় বাংলাদেশী, চোরকারবারী হয়ে ওঠেন বৈধ মালিক।