রানা হামিদ,বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
৮৫ বছর বয়স্ক টুরু মিয়া। নিজের ১২ শতক বসত ভিটার উপর মেয়ে জামাইকে সঙ্গে নিয়ে থাকতেন। সেই ১২ শতক জমি লিখে নিতে চায় মেয়ে এবং জামাই। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মাঝে মধ্যেই ঝগড়া বিবাদ হয়। গত ৭ নভেম্বর মেয়ে জামাই এর নির্যাতনের শিকার হয়ে টুরু মিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনদিন পর গতকাল (১০ নভেম্বর) পুলিশ সেই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে দেখে টুরু মিয়া মারা গেছেন। লাশের বুকে, ডান হাতের মাংশপেশীতে এবং হাতের কব্জিতে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় পুলিশ।
এ ঘটনায় টুরু মিয়ার প্রথম পক্ষের পুত্র সন্তান বাবু(৫৫) বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ নিহতের মেয়ে আঙ্গুর বেগম(৪৫) এবং জামাই আব্দুস সালাম(৫০) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এলাকাবাসী এবং থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বদলগাছী সদর ইউনিয়নের জাইজাতা গ্রামের মৃত আফসার আলী মন্ডল এর ছেলে টুরু মিয়া। তার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় পক্ষের দুটি মেয়ে সন্তান এবং প্রথম পক্ষের একটি ছেলে সন্তান আছে তার। ছেলেটি আলাদাভাবে মহাদেবপুর উপজেলার মাতাজিাট গ্রামে বসবাস করেন। দ্বিতীয় পক্ষের দুই মেয়েকে নিয়ে টুরু মিয়া জাইজাতা গ্রামে বসবাস করতেন। বড় মেয়ে আঙ্গুরের সাথে আব্দুস সালাম নামের এক যুবকের বিয়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে ঘরজামাই রাখেন টুরুমিয়া। টুরু মিয়ার বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে মেয়ে এবং জামাই মিলে সেই ১২ শতক জমি লিখে নিতে চায়। কিন্তু টুরু মিয়া তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে মাঝে মাঝেই মেয়ে ও জামাই মিলে টুরু মিয়াকে নির্যাতন করত। অনেক সময় বাড়ি থেকে বের করে দিত। তখন ভিক্ষা করে সে খাবারের সংস্থান করত।
তবে জামাই আব্দুস সালাম মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আমার শশুর কে মারধর করিনি। দুই তিন দিন আগে বাপ মেয়ের সাথে ঝগড়া হয়। থানার অভিযোগ বিষয়ে কিছু জানিনা। লাশের শরীরে আঘাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বয়স্ক মানুষ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় গ্রিলের দরজার আঘাত লেগে বুকে আর হাতে লেগেছিল।
এ বিষয়ে বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। লাশের শরীরে এবং ডান হাতের কবজির উপরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মেয়ে-জামাই কে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।