সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র এলাকা থেকে পাথর চুরি করে নিচ্ছে একটি মহল। সিলেট কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বাংলাদেশ রেলওয়ের ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে (বাংকার) এলাকা থেকে লাগাতার পাথর লুটপাটের পর এবার পাথর খেকোদের লুলুপ দৃষ্টি পড়েছে দেশের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকায়। সেখান থেকে নৌকা দিয়ে লুট হচ্ছে পাথর। পাথর খেকোদের প্রতিহত করতে না পারলে ধ্বংস হয়ে যাবে এই সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন সাদাপাথরবাহী নৌকা থেকে চাঁদাবাজি করছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী লোক তাদের মারধোরে আহত হয়েছে বদরুল নামের এক পাথর শ্রমিক। এ মৌসুমে প্রথম ঢল নামে মঙ্গলবার দিবাগত-রাতে। বৃষ্টির পানিতে পাহাড়ি ঢল নামায় রোপওয়ে ছেড়ে পাথর খেকোরা শুরু করে সাদাপাথরে লুটপাট। বুধবার সকাল থেকে কয়েক শত নৌকা দিয়ে পাথর লুটপাট করেছে এই লুটেরা। এসব নৌকা থেকে কালাইরাগ, কালিবাড়ি ও উত্তর রাজনগরের কয়েক যুবক নৌকা প্রতি ৫'শ টাকা করে চাঁদা নিয়ে পাথর লুটপাটের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। স্থানীয়দের চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় কলাবাড়ি গ্রামের কয়েকজন পাথর শ্রমিককে মারধোর করেছে চাঁদাবাজ চক্র। মারধোরে কারণে গুরুতর আহত শ্রমিক বদরুল কে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত প্রায় ৮ মাস থেকে ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে (বাংকার) খুঁড়ে পাথর লুটপাট চলছে। এছাড়া প্রায় ৩০-৪০টি সেইব মেশিন দিয়েও প্রতিদিন চলছে বাংকার এলাকায় পাথর উত্তোলন। পাথর উত্তোলনকারীদের কাছ থেকে বড় অংকের চাঁদাবাজি করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। তারা সেইব মেশিন থেকে ১৫ হাজার টাকা ও পাথর বুঝাই নৌকা থেকে ৩'শ টাকা হারে চাঁদা উত্তোলন করছে। প্রশাসনের বিভিন্ন বাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে এসব টাকা তুলছে ওই প্রভাবশালী মহল। পাশে বিজিবি'র ৩ ক্যাম্প থাকলেও এসব চাঁদাবাজির ব্যাপারে তাদের কোন কার্যকরী ভুমিকা নেই। এছাড়া পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করছে প্রভাবশালী মহলের লোকজন। পুলিশ ও বিজিবি সুত্র জানিয়েছে এসব চাঁদাবাজির বিষয়ে তাদের জানা নাই। তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যদি এমনটি করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন নাহার বলেন, সাদাপাথর এলাকায় পাথর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালানো হবে। বৈরী আবহাওয়া থাকার কারণে অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সাদাপাথর রক্ষায় কঠোর নজরদারি বাড়ানো হবে। এবং যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সিলেট ৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ নাজমুল হক জানান, পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর থেকে পাথর লুটপাটের খবর পেয়ে তিনি স্থানীয় বিজিবি'র ক্যাম্পকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। সাদাপাথর জাতীয় সম্পদ, এটা কোন ভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। এর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।