Sylhet 2:10 pm, Tuesday, 21 January 2025

জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান স্থগিত! ডিসিকে সভাপতি না করায়’

সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বিদ্যাপীঠ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, নবীন বরণ ও কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ‘ডিসিকে সভাপতি না করায়’ স্থগিত করা হয়েছে।  দাওয়াত পত্র ছাপিয়ে বিতরণের পর মঞ্চ প্রস্তুতসহ অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরও হয়নি অনুষ্ঠানটি।  বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সোমবার পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল।

জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু নোমান মো. শফিকুর রহমানকে সভাপতি করে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রাখা হয়েছিল সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে (ভিসি) অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দিনকে। অপর একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, রবিবার দুপুরে প্রধান শিক্ষককে নিজ কার্যালয়ে ডেকে পাঠান জেলা প্রশাসক। এর পর স্কুলে এসে সোমবারের অনুষ্ঠান স্থগিত ঘোষণা করেন প্রধান শিক্ষক। ২৩ জানুয়ারি নতুন করে অনুষ্ঠানের যে সূচি নির্ধারণ করা হয় সেখানে প্রধান শিক্ষকের স্থলে সভাপতি করা হয় ডিসিকে।
এদিকে, ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্নের আকস্মিক অনুষ্ঠান স্থগিত করায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা। সোমবার অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশ্যে এসে হতাশ হয়ে ফেরত যান।

স্কুলের একাধিক শিক্ষক জানান, প্রথা অনুযায়ী স্কুলের ১৩৮ বছরের ইতিহাসে সবধরণের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে আসছেন স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। এই প্রথম অনুষ্ঠান স্থগিত করে নতুন সূচিতে জেলা প্রশাসককে সভাপতি করা হয়েছে। তাঁকে সভাপতি করা হলে আমাদের প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের চেয়ার কোথায় থাকবে। উনাকে আমরা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে আমরা প্রধান অতিথি করেছি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মান্নান, লিটন রঞ্জন তালুকদার প্রমুখ আকস্মিক অনুষ্ঠান স্থগিত করায় বিস্মিত হয়েছেন।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিহাদুল তালুকদার বলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য আমরা গত ১৫ দিন ধরে রিহাসেল দিচ্ছি। সবকিছু প্রস্তুত। হঠাৎ শুনি অনুষ্ঠান স্থগিত। এতেকরে আমরা কষ্ট পেয়েছি।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য স্কুলের পূর্বপাশে সামিয়ানা টানিয়ে মঞ্চ প্রস্তুত করে রেখেছিল কর্তৃপক্ষ। আগত অতিথি ও শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল আপ্যায়নের। অনুষ্ঠানের চিঠি বিতরণ করা হয়েছিল শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথিদের। কিন্তু অনুষ্ঠানে স্থগিত করে দেওয়ায়  সব আয়োজন ভÐল হয়ে যায়। অপচয় হয় অনেক টাকার।

প্রধান শিক্ষক আবু নোমান মো. শফিকুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় পরিচানা কমিটির সভাপতি হিসেবে উনি (ডিসি) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। এ লক্ষ্যে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে কী হইত না হইত বিষয় না। প্রতিটা জিনিস পরিবর্তনশীল, যে কোনও কিছু পরিবর্তন হইতে পারে। উনার সাথে পরামর্শ করে স্যারকে (ডিসি) সভাপতি করেছি।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ  ইলিয়াস মিয়া বলেন, অনিবার্য কারণে অনুষ্ঠান স্থগিত হয়েছে। আমি তো অনুষ্ঠানে বন্ধ করতে বলি নাই।  অনুষ্ঠান কেন বন্ধ হয়েছে এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষকই ভাল জানেন। অনুষ্ঠানে আমাকে সভাপতি হলেই কি আর না হলেই কি।

About Author Information

SYLHET JOURNAL

জনপ্রিয় সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান স্থগিত! ডিসিকে সভাপতি না করায়’

প্রকাশের সময় : 05:38:28 am, Tuesday, 21 January 2025

সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বিদ্যাপীঠ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, নবীন বরণ ও কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ‘ডিসিকে সভাপতি না করায়’ স্থগিত করা হয়েছে।  দাওয়াত পত্র ছাপিয়ে বিতরণের পর মঞ্চ প্রস্তুতসহ অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরও হয়নি অনুষ্ঠানটি।  বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সোমবার পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল।

জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু নোমান মো. শফিকুর রহমানকে সভাপতি করে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রাখা হয়েছিল সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে (ভিসি) অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দিনকে। অপর একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, রবিবার দুপুরে প্রধান শিক্ষককে নিজ কার্যালয়ে ডেকে পাঠান জেলা প্রশাসক। এর পর স্কুলে এসে সোমবারের অনুষ্ঠান স্থগিত ঘোষণা করেন প্রধান শিক্ষক। ২৩ জানুয়ারি নতুন করে অনুষ্ঠানের যে সূচি নির্ধারণ করা হয় সেখানে প্রধান শিক্ষকের স্থলে সভাপতি করা হয় ডিসিকে।
এদিকে, ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্নের আকস্মিক অনুষ্ঠান স্থগিত করায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা। সোমবার অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশ্যে এসে হতাশ হয়ে ফেরত যান।

স্কুলের একাধিক শিক্ষক জানান, প্রথা অনুযায়ী স্কুলের ১৩৮ বছরের ইতিহাসে সবধরণের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে আসছেন স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। এই প্রথম অনুষ্ঠান স্থগিত করে নতুন সূচিতে জেলা প্রশাসককে সভাপতি করা হয়েছে। তাঁকে সভাপতি করা হলে আমাদের প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের চেয়ার কোথায় থাকবে। উনাকে আমরা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে আমরা প্রধান অতিথি করেছি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মান্নান, লিটন রঞ্জন তালুকদার প্রমুখ আকস্মিক অনুষ্ঠান স্থগিত করায় বিস্মিত হয়েছেন।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিহাদুল তালুকদার বলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য আমরা গত ১৫ দিন ধরে রিহাসেল দিচ্ছি। সবকিছু প্রস্তুত। হঠাৎ শুনি অনুষ্ঠান স্থগিত। এতেকরে আমরা কষ্ট পেয়েছি।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য স্কুলের পূর্বপাশে সামিয়ানা টানিয়ে মঞ্চ প্রস্তুত করে রেখেছিল কর্তৃপক্ষ। আগত অতিথি ও শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল আপ্যায়নের। অনুষ্ঠানের চিঠি বিতরণ করা হয়েছিল শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথিদের। কিন্তু অনুষ্ঠানে স্থগিত করে দেওয়ায়  সব আয়োজন ভÐল হয়ে যায়। অপচয় হয় অনেক টাকার।

প্রধান শিক্ষক আবু নোমান মো. শফিকুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় পরিচানা কমিটির সভাপতি হিসেবে উনি (ডিসি) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। এ লক্ষ্যে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে কী হইত না হইত বিষয় না। প্রতিটা জিনিস পরিবর্তনশীল, যে কোনও কিছু পরিবর্তন হইতে পারে। উনার সাথে পরামর্শ করে স্যারকে (ডিসি) সভাপতি করেছি।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ  ইলিয়াস মিয়া বলেন, অনিবার্য কারণে অনুষ্ঠান স্থগিত হয়েছে। আমি তো অনুষ্ঠানে বন্ধ করতে বলি নাই।  অনুষ্ঠান কেন বন্ধ হয়েছে এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষকই ভাল জানেন। অনুষ্ঠানে আমাকে সভাপতি হলেই কি আর না হলেই কি।