জগন্নাথপুরে গো-খাদ্য খড় তোলায় ব্যাস্ত কৃষক, ঘোলা ভর্তি সোনালী ফসল

জগন্নাথপুরে শতভাগ ধান কাটা শেষ। ঘোলা ভর্তি সোনালী ফসল বোরো ধান। এখন পশুখাদ্য খড় অর্থাৎ ধানের নেড়া গাদায় তুলতে ব্যবস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওর সহ ছোট-বড় ১৫ টি হাওরে বোরো ধান কাটা শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে তাকায় নির্বিঘ্নে উৎসব মূখর পরিবেশে লক্ষ মাত্রার চেয়ে বেশী সোনালী ফসল বোরো ধান ঘোলায় তুলেছেন কৃষক – কৃষাণী। মূখে তাদের আনন্দের হাসি। রৌদ্রজ্বল আবহাওয়ায় ধান শুকিয়ে ঘোলায় তুলে ক্লান্তিহীন কৃষক কূল গৃহপালিত পশু খাদ্য রোদে শুকিয়ে গাদায় তুলছেন। কাঁচা ঘাস জন্মানোর জায়গায় প্রায় না থাকায় শুকনো খড় অর্থাৎ ধানের নেড়ার উপর নির্ভরশীল উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক গরু-মহিষ।
এব্যাপারে কৃষক খালিক, আকিল, শহীদুল, রফিকুল, রকিব রোমেন ও সিরাজুল সহ একাধিক কৃষক তাদের অভিপ্রায় ব্যাক্ত করতে গিয়ে বলেন, হাওরের শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে তাকায় শঙ্কাহীন ভাবে লক্ষ মাত্রার চেয়ে বেশী সোনালী ফসল বোরো ধান ঘোলায় তুলেছি। এমনকি আমাদের এলাকায় কাঁচা ঘাস কম তাকায় ধানের মতো পশুখাদ্য খড়কুটো গাদায় তুলেছি। এবং তুলছি। আশাবাদী গোখাদ্যের সংকট হবে না। নিজ চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করতে পারবো। এক প্রশ্নের জবাবে তারা আরো বলেন, খড়ের গাদা কিংবা বোলা প্রতি ৩/৪ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করা যায়। ধানে-খড়ে আমরা সমৃদ্ধিশীল।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, জগন্নাথপুরে মোট ধান উৎপাদন এর অর্ধেক কাঁচা খঠ উৎপাদন হয়।যা থেকে শুকানোর পর এক চতুর্থাংশ গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত শুকনো খড় অর্থাৎ ধানের নেড়া পাওয়া যায়। উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকেরা চাহিদার চেয়েও বেশি খড়কুটো কৃষকেরা পেয়েছেন বলে জেনেছি। তিনি আরও বলেন, এখানে কাঁচা ঘাস কম হয়। তাই প্রধান গোখাদ্য হিসেবে খড়কুটো ব্যবহৃত হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে তাকায় ধানের মতো খড় গাদায় তুলেছেন কৃষকেরা। চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করতে পারবেন কৃষকেরা।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলায় শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। এ উপজেলায় ২০ হাজার ৪শত ২৩ হেক্টর জমিতে উৎপাদন এর লক্ষ মাত্রা ছিল ১ লাখ ২৮ হাজার ৪শত ৬৭ মেট্রিক টণ ধান। আবহাওয়া অনুকূলে তাকায় বাম্পার ফলন হওয়ায় লক্ষ মাত্রার চেয়ে বেশী ফলন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকারি ভাবে কৃষি প্রণোদনার আওতায় বাস্তবায়িত সমলয় পদ্ধতিতে ৫০ একর জমিতেও বোরোধান চাষাবাদ হয়েছিল।ধান কাটার শ্রমিক এর পাশাপাশি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে ৯৮ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, খড়কুটোও কৃষকেরা নির্বিঘ্নে গাদায় তুলেছেন। অনেকে এখনো খড় শুকিয়ে তুলছেন।