হুমায়ূন কবীর ফরীদি, স্টাফ রিপোর্টারঃ
বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জগন্নাথপুরে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। বাড়ছে নতুন ভোগান্তি। ধ্বসে পড়ছে কাচা ঘর-বাড়ী। নষ্ট হয়েছে রাস্তা -ঘাট। বিছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। সরকারি ও বেসরকারি ভাবে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ, স্বাস্থ্য সামগ্রী ও রান্না করা খাবার বিতরণ চলছে।
বিগত ১৬ ই জুন রোজ রবিবার দিবাগত রাত থেকে প্রবল বর্ষন আর উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা, নলজুর, ডাউকা ও রত্না নদী সহ বিভিন্ন নদ-নদী ও হাওর এর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলা সদর সহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের দুই শতাধিক গ্রামের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েন। বসত বাড়ীতে পানি উঠে পড়ার পাশা-পাশি তলিয়ে যায় গ্রামীণ রাস্তা -ঘাট ও মৎস্য খামার। প্রায় তিন হাজার পরিবার গবাদিপশু সহ বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র সহ উঁচু এলাকায় আত্মীয় স্বজন এর বাড়ীতে আশ্রিত আছেন। বেশ কয়েকটি সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা যোগে যাতায়াত করছেন। তবে ২৩ শে জুন রোজ রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ও জানাযায় , বিগত ১৯ শে জুন রোজ বুধবার থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। কাঁচা বাড়ী-ঘর এর বেড়া( বাঁশ-আড়ার বেড়া) ধ্বসে পড়ছে। সহায় সম্বলহীন জনসাধারণ নতুন ভোগান্তির শিকার হয়ে পড়েছেন। উপজেলা সদরের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী গ্রামীণ সড়ক বানের স্রোতে ভেঙে যাওয়ার পাশা-পাশি সড়কের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন কিংবা পায়ে হেঁটে চলাচলের ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন জনসাধারণ। এছাড়াও অন্য সংস্থানে হিমশিম খাচ্ছেন বন্যার্তরা। বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও আত্বীয় স্বজন এর বাড়ীতে আশ্রিত বন্যাদুর্গত মানুষের মাঝে সরকারি, সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি কর্তৃক শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার, নগদ অর্থ, চাল ও স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে ও আত্বীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রিত একাধিক ব্যাক্তি ভারাক্রান্ত মনে বলেন, বন্যার পানিতে বাড়ী-ঘরে পানি উঠে পড়েছে। তাই আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছি। অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছি। করতে পারছিনা কাজ-কর্ম। সরকারি ও বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতায় দিনাতিপাত করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তারা আরো বলেন, পানি কমতে শুরু করেছে। দিনমাদান ভালা থাকলে কাল পরশু মধ্যে বাড়ীতে চলে যাব। পানি কমার সাথে সাথে ঘরের বেড়া ধ্বসে পড়ছে। কিভাবে যে কি করি ভেবে কুল পাচ্ছিনা। এমতাবস্থায় চাই সরকারি সহযোগিতা।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল-বশিরুল ইসলাম মুঠোফোনে একান্ত আলাপকালে দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকাকে বলেন, বন্যা সম্পর্কে আমরা সতর্ক আছি। সার্বক্ষণিক বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে মানুষের খোঁজ খবর নিচ্ছি। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কিছুটা পানি কমেছে। এ পর্যন্ত ৩৪টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র সহ বিভিন্ন উঁচু বাড়ীতে ও মাদ্রাসায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রিত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে এবং চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। আরো ত্রাণ সহয়তা আসবে আশাবাদী।