Sylhet 6:23 pm, Tuesday, 24 December 2024

চাকরির চেয়ে দাদন ব্যবসাকেই প্রধান্য দেন শিক্ষক অজিত বরণ! 

আমির মাহবুব স্টাফ রিপোর্টার

স্কুল ফাঁকি দিয়ে দাদন ব্যবসাকেই প্রধান্য দেন শাল্লা উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নের অন্তগত উজান যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদার। স্কুল ফান্ডে আসা বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর এসবের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অবিভাবকেরা। গ্রামবাসীর পক্ষে তাদের বেশ কয়েকজনের যৌথ স্বাক্ষরে অভিযোগটি করা হয়।

এর আগে মোটা অঙ্কের সুদ কেলেঙ্কারির অভিযোগও পাওয়া গিয়েছিল অজিত বরণ তালুকদারের বিরুদ্ধে। এনিয়ে বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। তার পরই তদন্তে নামে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।  তার সুূদ কেলেঙ্কারির সংবাদগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় পুরো উপজেলা জোড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়! প্রশ্ন উটেছে একজন সরকারি চাকরিজীবি হয়ে তিনি কিভাবে নিয়মবহির্ভূত ভাবে সুদের ব্যবসা করেন? বা একজন স্কুল শিক্ষক হয়ে এত টাকাই বা সে কোথায় পেল? এনিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে সারা উপজেলায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,উজান যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে জরুরি ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ আসে। স্লিপ ফান্ডের জন্য আরো ২৫ হাজার ও প্রাক-প্রাথমিকের জন্য আরো ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়েই অজিত বরণ তালুকদার তার ইচ্ছেমত নামমাত্র কাজ করে অধিকাংশ টাকাই সে আত্মসাৎ করে তার পকেটে ঢুকিয়েছে। বিদ্যালয়ে অধিকাংশ দিনই তিনি অনুপস্থিত থাকে। যদিও বা আসেন হাজিরা খাতায় হাজিরা দিয়েই দুপুর ১১/১২ টায় চলে যায়।

অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুদ কেলেঙ্কারির যে অভিযোগটি করা হয়েছিল সেটা নিয়েও স্কুল কমিটির সদস্য,অবিভাবক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিব্রতকর অবস্থায় পরেছেন। ওই শিক্ষকও বিদ্যালয়ে অনিয়মিত যাওয়ায় স্কুলে পাঠদান,ফলাফল সহ সবকিছুতেই ব্যাঘাত ঘটছে। সেজন্য অজিত বরণ তালুকদারকে এই স্কুল থেকে অন্যত্র বদলি করার জন্য দাবি তুলেছেন গ্রামবাসী।

শুধু তাই নয়,অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের দায়-দায়িত্ব বাদ দিয়ে এসএসমসি কমিটির সদস্য ও গ্রামবাসীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করা সহ ফাটল ধরানোর কাজে লিপ্ত থাকেন তিনি। ওই শিক্ষক দ্বারা বিবাদ সৃষ্টির কারনে গ্রামবাসীর মধ্যে এর আগে একবার মারামারিও হয়েছিল। বর্তমানেও ওই শিক্ষকের ইন্ধন ও বিবাদ সৃষ্টি চেষ্টার ফলে উজান যাত্রাপুর গ্রামের মানুষের মধ্যে দুটি দল সৃষ্টি হয়েছে এবং যেকোনো সময় যেকোনো কারনে ওই গ্রামে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

এমতাবস্থায় ওই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবকেরা ওই দুর্নীতিবাজ,দাদন ব্যবসায়ি,ফাঁকিবাজ প্রধান শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদারের অন্যত্র বদলী করা সহ লিখিত অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদারকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায় নি। খোঁজ নিয়ে তার বাসভবনেও পাওয়া যায় নি। সেজন্য তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এবিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সালাম বলেন গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়েছি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন শাল্লা থেকে শিক্ষা কর্মকর্তা কাগজপত্র আমাকে পাঠিয়েছে। সেগুলো আমি বিভাগীয় দপ্তরে পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো: জালাল উদ্দীন বলেন বদলীর সুপারিশ যদি আমার কাছে পাঠিয়ে থাকেন তাহলে কাগজপত্র দেখে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

About Author Information

SYLHET JOURNAL

জনপ্রিয় সংবাদ

সেচ্ছাসেবক দল নেতার খোঁজ-খবর নিয়ে প্রশংসা ভাসছেন জনাব তারেক রহমান

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

চাকরির চেয়ে দাদন ব্যবসাকেই প্রধান্য দেন শিক্ষক অজিত বরণ! 

প্রকাশের সময় : 11:15:11 am, Tuesday, 25 June 2024

আমির মাহবুব স্টাফ রিপোর্টার

স্কুল ফাঁকি দিয়ে দাদন ব্যবসাকেই প্রধান্য দেন শাল্লা উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নের অন্তগত উজান যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদার। স্কুল ফান্ডে আসা বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর এসবের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অবিভাবকেরা। গ্রামবাসীর পক্ষে তাদের বেশ কয়েকজনের যৌথ স্বাক্ষরে অভিযোগটি করা হয়।

এর আগে মোটা অঙ্কের সুদ কেলেঙ্কারির অভিযোগও পাওয়া গিয়েছিল অজিত বরণ তালুকদারের বিরুদ্ধে। এনিয়ে বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। তার পরই তদন্তে নামে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।  তার সুূদ কেলেঙ্কারির সংবাদগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় পুরো উপজেলা জোড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়! প্রশ্ন উটেছে একজন সরকারি চাকরিজীবি হয়ে তিনি কিভাবে নিয়মবহির্ভূত ভাবে সুদের ব্যবসা করেন? বা একজন স্কুল শিক্ষক হয়ে এত টাকাই বা সে কোথায় পেল? এনিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে সারা উপজেলায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,উজান যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে জরুরি ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ আসে। স্লিপ ফান্ডের জন্য আরো ২৫ হাজার ও প্রাক-প্রাথমিকের জন্য আরো ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়েই অজিত বরণ তালুকদার তার ইচ্ছেমত নামমাত্র কাজ করে অধিকাংশ টাকাই সে আত্মসাৎ করে তার পকেটে ঢুকিয়েছে। বিদ্যালয়ে অধিকাংশ দিনই তিনি অনুপস্থিত থাকে। যদিও বা আসেন হাজিরা খাতায় হাজিরা দিয়েই দুপুর ১১/১২ টায় চলে যায়।

অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুদ কেলেঙ্কারির যে অভিযোগটি করা হয়েছিল সেটা নিয়েও স্কুল কমিটির সদস্য,অবিভাবক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিব্রতকর অবস্থায় পরেছেন। ওই শিক্ষকও বিদ্যালয়ে অনিয়মিত যাওয়ায় স্কুলে পাঠদান,ফলাফল সহ সবকিছুতেই ব্যাঘাত ঘটছে। সেজন্য অজিত বরণ তালুকদারকে এই স্কুল থেকে অন্যত্র বদলি করার জন্য দাবি তুলেছেন গ্রামবাসী।

শুধু তাই নয়,অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের দায়-দায়িত্ব বাদ দিয়ে এসএসমসি কমিটির সদস্য ও গ্রামবাসীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করা সহ ফাটল ধরানোর কাজে লিপ্ত থাকেন তিনি। ওই শিক্ষক দ্বারা বিবাদ সৃষ্টির কারনে গ্রামবাসীর মধ্যে এর আগে একবার মারামারিও হয়েছিল। বর্তমানেও ওই শিক্ষকের ইন্ধন ও বিবাদ সৃষ্টি চেষ্টার ফলে উজান যাত্রাপুর গ্রামের মানুষের মধ্যে দুটি দল সৃষ্টি হয়েছে এবং যেকোনো সময় যেকোনো কারনে ওই গ্রামে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

এমতাবস্থায় ওই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবকেরা ওই দুর্নীতিবাজ,দাদন ব্যবসায়ি,ফাঁকিবাজ প্রধান শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদারের অন্যত্র বদলী করা সহ লিখিত অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদারকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায় নি। খোঁজ নিয়ে তার বাসভবনেও পাওয়া যায় নি। সেজন্য তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এবিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সালাম বলেন গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়েছি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন শাল্লা থেকে শিক্ষা কর্মকর্তা কাগজপত্র আমাকে পাঠিয়েছে। সেগুলো আমি বিভাগীয় দপ্তরে পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো: জালাল উদ্দীন বলেন বদলীর সুপারিশ যদি আমার কাছে পাঠিয়ে থাকেন তাহলে কাগজপত্র দেখে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।