Sylhet 3:45 pm, Monday, 23 December 2024

জাদুকাটার খনিজ বালি চুরি লুপাটে পুলিশের দুই এসআই সহ অপর এক এএসআই’র বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বরাবর অভিযোগ

বিশেষ প্রতিবেদক:
সীমান্ত নদী জাদুকাটার রাষ্ট্রীয় সম্পদ অবৈধভাবে ড্রেজার বোমা সেইভ মেশিনে নদীর দু’তীর তীর (পাড়) কেটে হাজার কোটি টাকার খনিজ বালি চুরি ও লুটে গোপন সমঝোতায় বালিখেকো সিন্ডিক্যঠঁকে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের দুই এসআই, এএসআই এবং তাদের সহযোগিদের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে ।
অভিযুক্ত পুলিশ অফিসাররা হলেন , সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হেলাল উদ্দিন, তার একান্ত সহযোগি এসআই আহমেদুল আরেফিন ও থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের টু-আইসি এএসআই বাচ্চু।
সোমবার অন্তবর্তী কালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ,মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল দফতরে বরাবর অভিযোগ দুটি প্রেরণ করা হয়েছে।
জাদুকাটা নদীর তীরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থ এক বাসিন্দা ও অফর এক ভোক্তভোগী জনস্বার্থে ওই অভিযোগ প্রেরণ করে অভিযুক্তদের ব্যাপারে নিরপেক্ষ সূষ্ট প্রভাবমুক্ত তদন্তের পর বিভাগীয় শাস্তির পাশাপাশি কয়েক হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ খনিজ বালি অবৈধভাবে লুপাট ও চুরি করানো হয়েছে সেজন্য অভিযুক্তদের ব্যাপারে দুদকের পৃথক তদন্ত দাবি করে চুরি ও লুটে নেয়া খনিজ বালির সরকারি মূল্য ভ্যাট আয়করসহ সরকারি কোষাগারে ফেরতের মাধ্যমে জমা নেয়ার দাবি তুলেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তাহিরপুরের সীমান্ত নদী জাদুকাটা থেকে অবৈধভাবে নদীর দুই পাড়ের কয়েক কিলোমিটার এলাকা কেটে, একাধিক সিন্ডিক্যাটের মাধ্যমে এসআই হেলাল উদ্দিন, তার একান্ত সহযোগি সিলেটের বহুল আলোচিত আত্বগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতার ভাগ্নে পরিচয়ধারী একটি তদন্তনাধীন মামলার প্রধান আসামির পাতানো ভাই বিতর্কিত এসআই আহমেদুল আরেফিন, থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই বাচ্চু প্রকাশ্যে গোপনে জড়িত থেকে সদ্য বিদায়ি আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এবং বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়েও বেশ জোরে সোরো সাধারন জনগণের রেকর্ডকৃত, খাঁস খতিয়ানভুক্ত, ইজারাদারের মহাল বহিভ’ত ভুমি, বসতি সহ জাদুকাটা নদীর দু’তীরে থাকা রাষ্ট্রীয় সম্পদ খনিজ বালি চুরি ও লুপাট করিয়ে লাখ লাখ টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন।
তাহিরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হেলাল উদ্দিন, এসআই আহমেদুল আরেফিন , এএসআই বাচ্চুর সার্বিক সহযোগিতায় জাদুকাটা নদীতে অতীতে প্রতিদিন ড্রেজার, বর্তমানে নদীর দু’তীওে ৩০০/৪০০ সেট সেইভ মেশিন, শতাধিক বোমা মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে নদীর পাড় কেটে বালি উক্তোলন করায় নদী তীরের ফসলী জমি, বসতি, রাস্তাঘাট নদী গর্ভে বিলীণ হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ বিপর্যয় পঘটিয়ে রিবেশের ভয়স্খর ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ায় এলাকার সূশীল সমাজ, এলাকার বাহিরে পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা সহ বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন,প্রতিবাদ সমাবেশ করে আসলেও পুলিশের ওই তিন অফিসারের কারনে নদীতে অবৈধভাবে বালি উক্তোলন নদীর পাড় কাটা, সেইভ ও বোমা মেশিণের তান্ডব বন্ধই হচ্ছেনা।
লোক দেখানো পুলিশের বিশেষ অভিযানের সাথে সাথেই বিতর্কিত ওই তিন অফিসার বালি খেকোদের সাথে যোগোযোগ করে নদীরপাড় কাটা , সেইভ মেশিণে বালি চুরিতে আরো বেশী তৎপর হয়ে উঠেনে। এতে করে পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্য হচ্ছে।
বালিখেকো সিন্ডিক্যাটের মাধ্যমে জাদুকাটা নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন, সেইভ মেশিন বোমা মেশিন দিয়ে বলি উক্তোনের সুযোগ দিয়ে পুলিশের ওই তিন অফিসার প্রতিরাতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতিদিন নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকের মাধ্যমে নদীর পাড় কাটা, সেইভ, বোমা মেশিনের ভিডিও ফুটেজ তুলে ধওে প্রতিকার চাইলেও ওই তিন গুণধর পুলিশ অফিসার বহ্যাল তবিয়্যতে থাকায় নদীতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোটি কোটি টাকার থনিজ বালি অবৈধভাবে চুরি, লুপাট বন্ধ হচ্ছে না,বন্ধ হচ্ছেনা নদীর পাড় কাটা।
অভিযোগে আরো বলা হয়, বিগত দিনে ও রাতে জাদুকাটায় শত শত ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে এ অবৈধ কার্যক্রম সংগঠিত হওয়ায় জাদুকাটা নদীর তীরে অবস্থিত বড়টেক, পাটলাই নদীর উৎসমুখ, মাহারাম নদীর উৎস মুখ, বারেবটিলা, অনেক সরকারি বেসরকারি স্থাপনাই নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। জাদুকাটা নদীর পাড় কাটা বন্ধে অবৈধ বালি উক্তোলন বন্ধে সর্বস্তরের জনগণ পুলিশের ওই তিন দুই অফিসার সহ তাদের সহযোগি আরো ক’জন উর্ধ্বতন পুলিশ অফিসার নদীর এপার ওপার পুরো বালিখেকো সিন্ডিক্যাটের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে আসছে এরপরও জেলা ,থানা, পুলিশ তদন্তকেন্দ্রর দায়িত্বশীল অফিসারগণ, জেলঅ উপজেলা প্রশাসন বালি মাহালের ইজারাদারগণকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে অবৈধ আয়ের ভাগ বাটোয়রা পেতেই নদীর পাড় কাট, নদীতে সেইভ , ড্রেজার , বোমা মেশিনের তান্ডব বন্ধ হচ্ছেনা বলেও ধারণা পোষণ করেন অভিযোগকারি।
মঙ্গলবার তাহিরপুর উপজেলার হেফাজতে ইসলাম তাহিরপুর উপজেলার সহ সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, বিগত দিনে অভিযানের নামে জাদুকাটায় সে সকল মামলা , বা আটক করা হয়েছে মূলত সেই সকল মামলায় প্রকৃত বালিখোকো, ড্রেজার, সেইভ, বোমা মেশিন মালিক ও ব্যবসায়িরুপী দানবদের কাউকে রহস্যজনক কারনে পুলিশ আসামি করেনি, আটকও হয়নি। মামলায় আসামী করা হয়েছে নিরীহ হতদরিদ্র নৌকার মাঝি সুকানীদের। তিনি আরো বলেন, চলমান অভিযানের শুরু থেকে নদীতে সোমবার অবধি কথিত অভিযানের নামে যে সকল বালি বোঝাই ট্রলার, পঞ্চবটি ট্রলার, কাঠ বডি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে সেখানে জব্দ তালিকায় বালির পরিমাণ কম দেখিয়ে নিলামে দেয়া সেই বালির অতিরিক্ত টাকাও রাখেন , থানার দায়িত্বশীল অফিসার, আবার কোন কোন সময় থানার ঘাটে রাখা ট্রলার থেকে জব্দ তালিকাে রাখা হয়নি এমন ইঞ্জিন গোপনে বিক্রি করে দেয়া হয়, আবার ট্রলার, নৌকা পঞ্চবটি ট্রলারের মালিকানা দাবি করে আদালতের আবেদন করলে প্রতিবেদনের জন্য ও দাবিকৃত নৌ পরিবহন সমঝিয়ে দেবার সময়ও মোটা অংকের ঘুস নিচ্ছেন থানা পুলিশের দায়িত্বশীলরা।
মঙ্গলবার উপজেলার কলাগাঁও এলাকার ব্যবসায়ি ও শ্রমিক হক মিয়া অভিযোগ করেন, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচেনের পর নির্বাচনী সহিংসতায় আমার উপর রর্ক্ষাথ হামলায় হয়। এরপর আমার ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তকারি অফিসার এসআই আহমেদুল আরেফিন ওই মামলার প্রধান আসামি কলাগাঁও’র মৃত জয়দরের ছেলে, ওয়ার্ড আওয়ামী লেিগর সভাপতি , স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তাণিলকাভুক্ত অস্ত্র চোরাকারবারি (মৃত) নজরুলের সহোদর এমরুল হাসান ওরফে ট্রলি এমরুলের পাতানো ভাই। থানা থেকে পাঁচ মাসের অধিক সময় থানার টেকেরঘাট অস্থায়ী ফাঁড়ির ইনচার্জ থাকা অবস্থায় আহমেদুল আরেফিন কয়লা চুনাপাথর, চিনি, পেয়াজ , হুন্ডি, মাদক সহ নানা চোরাচালান ও পরবর্তীতে সীমান্ত ছড়া নদী কলাগাঁও’র খনিজ বালি চুরি লুটে অনৈতিক আর্থীক সুবিধা নেয় ট্রলি এমরুলের নিকট থেকে। এখন আদালতের জামালগঞ্জ থানা ও তাহিরপুর থানার দায়েরি আরো একটি সহ দুটি মামলার আদালতে বিচারাধীন আসামী ট্রলি এমরুলকে সাথে নিয়ে বাদী পক্ষকে বাদ দিয়ে মামলার তদন্ত করেছেন এসআই আহমেদুল আরেফিন। কয়েক লাখ টাকা ঘুস নিয়ে মামলার প্রধান আসামী ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি অস্ত্রচোরাকারবারি ভাই ট্রলি এমরুল সহ ওই মামলায় ৬ থেকে ৭ জন আসামীকে বাদ দিয়ে আদালতের প্রতিবেদন দেয়ার চেষ্টা করছেন আলোচিত প্রধান আসামি ট্রলি এমরুলের পাতানো ভাই মামলার তদন্তাকারি বিতর্কিত অফিসার এসআই আহমেদুল আরেফিন।
মঙ্গলবার উপজেলার মন্দিয়াতা গ্রামের কুতুব উদ্দিন অভিযোগ করেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আমার ভাতিজার হাত-পা কেটে জঙ্গলে ফেলে রাখে আওয়ামী লীগের লালিত একদল সন্ত্রাসীরা। থানায় কয়েকজনের নামে মামলা করতে গেলে সেকেন্ড অফিসার এসআই হেলাল অভিযুক্তদেও নিকট থেকে মোটা অংকের আগাম ঘুস নিয়ে এজাহার কপি জোর করে কেড়ে নিয়ে মূল অভিযুক্তদেও বাদ দিয়ে এজাহার দিতে বাধ্য করেন পুলিশী ভয়-ভীতি দেখিয়ে। এছাড়াও উপজেলার শ্রীপুর বাজারে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরকে তিন জন রক্তার্থ আহত হলে এসআই হেলাল এটি প্যান্সিল ব্যাটারীর বিস্ফোরণ বলে চালিয়ে দিয়ে ভারত থেকে বিস্ফোরক সংগ্রহকারিকে রক্ষার চেষ্টা করেন কয়েক লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের বিনিময়ে। সীমান্তের কয়লা চোরাকারবারিদের সাথে রয়েছে তার গোপন সমঝোতা।
অভিযোগ সুত্রে আরো জানা যায়, পুলিশের ওই তিন গুণধর অফিসার পরস্পরের যোগসাজসে বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউরগড় , মনাইপাড়, সাহিদাবাদ, জাদুকাটা নদীর নৌ পথ কেন্দ্রীক, উওর বড়দল ইউনিয়নের রাজাই,কড়ইগড়া, বারেকটিলা সীমান্ত রুটে ভারতীয় মাদক, গাঁজা, ভারতীয় সেখ নাসির বিড়ির, চিনি, পেয়াজ, কসমেটিকস, ফুসকা, কয়লা, গবাধিপশু (গরু, মহিষ, ঘোড়া, উঠ) চোরাচালানসহ সব ধরণের চোরাকারবারিদের সাথে গোপন সমঝোতায় দু’হাতে টাকা কামিয়েছেন নির্ব্রিগ্নে।
উপজেলার ঘাগটিয়া, ঘাগড়া, রাজারগাঁও, বিন্নাকুলির কয়েক নিরীহ হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা জানান, থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই বাচ্চু , জাদুকাটা নদীর পাড় কাটা, সেইভ ড্রেজার , বোমা মেশিনে বালি চুরি করে এমন কয়েকজন বালি লুটেরা কারবারি শফিক সর্দার, মাসুক সর্দা,কিরণ রায়,ইমামুল,জামাল,নায়িম উদ্দিন,এএসআই’র, ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল চালক (ড্রাইভার) বুলবুল সিকদার,শাহীন, জুনায়েদ সর্দার, শাহেনশাহ সহ জাদুকাটা নদীর দু’তীরে আরো একাধিক অবৈধ বালি কারবারির নিকট থেকে পুলিশের নামে লাখ লাখ টাকা প্রতিদিন চাঁদাবাজির পাশাপাশী গোপনে গোপনে গোপনে ওই সব বালি কারবারিদেও সাথে অবৈধ বালি ব্যবসায় পার্টনার (অংশীদার) হয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে , তাহিরপুর থানার বাদাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের টু-আইসি এএসআই বাচ্চু বলেন, আমি এসব অভিযোগের ব্যাপারে কিছুই জানিনা, এসব বিষয় আমার সিনিয়র অফিসারগণ বলতে পারবেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে, তাহিরপুর থানার একাধিক বারের সেকেন্ড অফিসার ও একাধিক ইউনিয়নের বিট অফিসার এসআই আহমেদুল আরেফিনের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ না করে অভিযোগের প্রেক্ষিতে বক্তব্য প্রদানের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে, তাহিরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হেলাল উদ্দিন বলেন, এসব বিষয়ে আমি কিছু জানিই না।

About Author Information

SYLHET JOURNAL

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাতকে রেলওয়ের কংক্রিট স্লিপার প্লান্টে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

জাদুকাটার খনিজ বালি চুরি লুপাটে পুলিশের দুই এসআই সহ অপর এক এএসআই’র বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বরাবর অভিযোগ

প্রকাশের সময় : 04:41:10 pm, Tuesday, 17 September 2024

বিশেষ প্রতিবেদক:
সীমান্ত নদী জাদুকাটার রাষ্ট্রীয় সম্পদ অবৈধভাবে ড্রেজার বোমা সেইভ মেশিনে নদীর দু’তীর তীর (পাড়) কেটে হাজার কোটি টাকার খনিজ বালি চুরি ও লুটে গোপন সমঝোতায় বালিখেকো সিন্ডিক্যঠঁকে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের দুই এসআই, এএসআই এবং তাদের সহযোগিদের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে ।
অভিযুক্ত পুলিশ অফিসাররা হলেন , সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হেলাল উদ্দিন, তার একান্ত সহযোগি এসআই আহমেদুল আরেফিন ও থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের টু-আইসি এএসআই বাচ্চু।
সোমবার অন্তবর্তী কালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ,মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল দফতরে বরাবর অভিযোগ দুটি প্রেরণ করা হয়েছে।
জাদুকাটা নদীর তীরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থ এক বাসিন্দা ও অফর এক ভোক্তভোগী জনস্বার্থে ওই অভিযোগ প্রেরণ করে অভিযুক্তদের ব্যাপারে নিরপেক্ষ সূষ্ট প্রভাবমুক্ত তদন্তের পর বিভাগীয় শাস্তির পাশাপাশি কয়েক হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ খনিজ বালি অবৈধভাবে লুপাট ও চুরি করানো হয়েছে সেজন্য অভিযুক্তদের ব্যাপারে দুদকের পৃথক তদন্ত দাবি করে চুরি ও লুটে নেয়া খনিজ বালির সরকারি মূল্য ভ্যাট আয়করসহ সরকারি কোষাগারে ফেরতের মাধ্যমে জমা নেয়ার দাবি তুলেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তাহিরপুরের সীমান্ত নদী জাদুকাটা থেকে অবৈধভাবে নদীর দুই পাড়ের কয়েক কিলোমিটার এলাকা কেটে, একাধিক সিন্ডিক্যাটের মাধ্যমে এসআই হেলাল উদ্দিন, তার একান্ত সহযোগি সিলেটের বহুল আলোচিত আত্বগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতার ভাগ্নে পরিচয়ধারী একটি তদন্তনাধীন মামলার প্রধান আসামির পাতানো ভাই বিতর্কিত এসআই আহমেদুল আরেফিন, থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই বাচ্চু প্রকাশ্যে গোপনে জড়িত থেকে সদ্য বিদায়ি আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এবং বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়েও বেশ জোরে সোরো সাধারন জনগণের রেকর্ডকৃত, খাঁস খতিয়ানভুক্ত, ইজারাদারের মহাল বহিভ’ত ভুমি, বসতি সহ জাদুকাটা নদীর দু’তীরে থাকা রাষ্ট্রীয় সম্পদ খনিজ বালি চুরি ও লুপাট করিয়ে লাখ লাখ টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন।
তাহিরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হেলাল উদ্দিন, এসআই আহমেদুল আরেফিন , এএসআই বাচ্চুর সার্বিক সহযোগিতায় জাদুকাটা নদীতে অতীতে প্রতিদিন ড্রেজার, বর্তমানে নদীর দু’তীওে ৩০০/৪০০ সেট সেইভ মেশিন, শতাধিক বোমা মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে নদীর পাড় কেটে বালি উক্তোলন করায় নদী তীরের ফসলী জমি, বসতি, রাস্তাঘাট নদী গর্ভে বিলীণ হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ বিপর্যয় পঘটিয়ে রিবেশের ভয়স্খর ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ায় এলাকার সূশীল সমাজ, এলাকার বাহিরে পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা সহ বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন,প্রতিবাদ সমাবেশ করে আসলেও পুলিশের ওই তিন অফিসারের কারনে নদীতে অবৈধভাবে বালি উক্তোলন নদীর পাড় কাটা, সেইভ ও বোমা মেশিণের তান্ডব বন্ধই হচ্ছেনা।
লোক দেখানো পুলিশের বিশেষ অভিযানের সাথে সাথেই বিতর্কিত ওই তিন অফিসার বালি খেকোদের সাথে যোগোযোগ করে নদীরপাড় কাটা , সেইভ মেশিণে বালি চুরিতে আরো বেশী তৎপর হয়ে উঠেনে। এতে করে পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্য হচ্ছে।
বালিখেকো সিন্ডিক্যাটের মাধ্যমে জাদুকাটা নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন, সেইভ মেশিন বোমা মেশিন দিয়ে বলি উক্তোনের সুযোগ দিয়ে পুলিশের ওই তিন অফিসার প্রতিরাতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতিদিন নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকের মাধ্যমে নদীর পাড় কাটা, সেইভ, বোমা মেশিনের ভিডিও ফুটেজ তুলে ধওে প্রতিকার চাইলেও ওই তিন গুণধর পুলিশ অফিসার বহ্যাল তবিয়্যতে থাকায় নদীতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোটি কোটি টাকার থনিজ বালি অবৈধভাবে চুরি, লুপাট বন্ধ হচ্ছে না,বন্ধ হচ্ছেনা নদীর পাড় কাটা।
অভিযোগে আরো বলা হয়, বিগত দিনে ও রাতে জাদুকাটায় শত শত ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে এ অবৈধ কার্যক্রম সংগঠিত হওয়ায় জাদুকাটা নদীর তীরে অবস্থিত বড়টেক, পাটলাই নদীর উৎসমুখ, মাহারাম নদীর উৎস মুখ, বারেবটিলা, অনেক সরকারি বেসরকারি স্থাপনাই নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। জাদুকাটা নদীর পাড় কাটা বন্ধে অবৈধ বালি উক্তোলন বন্ধে সর্বস্তরের জনগণ পুলিশের ওই তিন দুই অফিসার সহ তাদের সহযোগি আরো ক’জন উর্ধ্বতন পুলিশ অফিসার নদীর এপার ওপার পুরো বালিখেকো সিন্ডিক্যাটের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে আসছে এরপরও জেলা ,থানা, পুলিশ তদন্তকেন্দ্রর দায়িত্বশীল অফিসারগণ, জেলঅ উপজেলা প্রশাসন বালি মাহালের ইজারাদারগণকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে অবৈধ আয়ের ভাগ বাটোয়রা পেতেই নদীর পাড় কাট, নদীতে সেইভ , ড্রেজার , বোমা মেশিনের তান্ডব বন্ধ হচ্ছেনা বলেও ধারণা পোষণ করেন অভিযোগকারি।
মঙ্গলবার তাহিরপুর উপজেলার হেফাজতে ইসলাম তাহিরপুর উপজেলার সহ সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, বিগত দিনে অভিযানের নামে জাদুকাটায় সে সকল মামলা , বা আটক করা হয়েছে মূলত সেই সকল মামলায় প্রকৃত বালিখোকো, ড্রেজার, সেইভ, বোমা মেশিন মালিক ও ব্যবসায়িরুপী দানবদের কাউকে রহস্যজনক কারনে পুলিশ আসামি করেনি, আটকও হয়নি। মামলায় আসামী করা হয়েছে নিরীহ হতদরিদ্র নৌকার মাঝি সুকানীদের। তিনি আরো বলেন, চলমান অভিযানের শুরু থেকে নদীতে সোমবার অবধি কথিত অভিযানের নামে যে সকল বালি বোঝাই ট্রলার, পঞ্চবটি ট্রলার, কাঠ বডি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে সেখানে জব্দ তালিকায় বালির পরিমাণ কম দেখিয়ে নিলামে দেয়া সেই বালির অতিরিক্ত টাকাও রাখেন , থানার দায়িত্বশীল অফিসার, আবার কোন কোন সময় থানার ঘাটে রাখা ট্রলার থেকে জব্দ তালিকাে রাখা হয়নি এমন ইঞ্জিন গোপনে বিক্রি করে দেয়া হয়, আবার ট্রলার, নৌকা পঞ্চবটি ট্রলারের মালিকানা দাবি করে আদালতের আবেদন করলে প্রতিবেদনের জন্য ও দাবিকৃত নৌ পরিবহন সমঝিয়ে দেবার সময়ও মোটা অংকের ঘুস নিচ্ছেন থানা পুলিশের দায়িত্বশীলরা।
মঙ্গলবার উপজেলার কলাগাঁও এলাকার ব্যবসায়ি ও শ্রমিক হক মিয়া অভিযোগ করেন, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচেনের পর নির্বাচনী সহিংসতায় আমার উপর রর্ক্ষাথ হামলায় হয়। এরপর আমার ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তকারি অফিসার এসআই আহমেদুল আরেফিন ওই মামলার প্রধান আসামি কলাগাঁও’র মৃত জয়দরের ছেলে, ওয়ার্ড আওয়ামী লেিগর সভাপতি , স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তাণিলকাভুক্ত অস্ত্র চোরাকারবারি (মৃত) নজরুলের সহোদর এমরুল হাসান ওরফে ট্রলি এমরুলের পাতানো ভাই। থানা থেকে পাঁচ মাসের অধিক সময় থানার টেকেরঘাট অস্থায়ী ফাঁড়ির ইনচার্জ থাকা অবস্থায় আহমেদুল আরেফিন কয়লা চুনাপাথর, চিনি, পেয়াজ , হুন্ডি, মাদক সহ নানা চোরাচালান ও পরবর্তীতে সীমান্ত ছড়া নদী কলাগাঁও’র খনিজ বালি চুরি লুটে অনৈতিক আর্থীক সুবিধা নেয় ট্রলি এমরুলের নিকট থেকে। এখন আদালতের জামালগঞ্জ থানা ও তাহিরপুর থানার দায়েরি আরো একটি সহ দুটি মামলার আদালতে বিচারাধীন আসামী ট্রলি এমরুলকে সাথে নিয়ে বাদী পক্ষকে বাদ দিয়ে মামলার তদন্ত করেছেন এসআই আহমেদুল আরেফিন। কয়েক লাখ টাকা ঘুস নিয়ে মামলার প্রধান আসামী ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি অস্ত্রচোরাকারবারি ভাই ট্রলি এমরুল সহ ওই মামলায় ৬ থেকে ৭ জন আসামীকে বাদ দিয়ে আদালতের প্রতিবেদন দেয়ার চেষ্টা করছেন আলোচিত প্রধান আসামি ট্রলি এমরুলের পাতানো ভাই মামলার তদন্তাকারি বিতর্কিত অফিসার এসআই আহমেদুল আরেফিন।
মঙ্গলবার উপজেলার মন্দিয়াতা গ্রামের কুতুব উদ্দিন অভিযোগ করেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আমার ভাতিজার হাত-পা কেটে জঙ্গলে ফেলে রাখে আওয়ামী লীগের লালিত একদল সন্ত্রাসীরা। থানায় কয়েকজনের নামে মামলা করতে গেলে সেকেন্ড অফিসার এসআই হেলাল অভিযুক্তদেও নিকট থেকে মোটা অংকের আগাম ঘুস নিয়ে এজাহার কপি জোর করে কেড়ে নিয়ে মূল অভিযুক্তদেও বাদ দিয়ে এজাহার দিতে বাধ্য করেন পুলিশী ভয়-ভীতি দেখিয়ে। এছাড়াও উপজেলার শ্রীপুর বাজারে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরকে তিন জন রক্তার্থ আহত হলে এসআই হেলাল এটি প্যান্সিল ব্যাটারীর বিস্ফোরণ বলে চালিয়ে দিয়ে ভারত থেকে বিস্ফোরক সংগ্রহকারিকে রক্ষার চেষ্টা করেন কয়েক লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের বিনিময়ে। সীমান্তের কয়লা চোরাকারবারিদের সাথে রয়েছে তার গোপন সমঝোতা।
অভিযোগ সুত্রে আরো জানা যায়, পুলিশের ওই তিন গুণধর অফিসার পরস্পরের যোগসাজসে বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউরগড় , মনাইপাড়, সাহিদাবাদ, জাদুকাটা নদীর নৌ পথ কেন্দ্রীক, উওর বড়দল ইউনিয়নের রাজাই,কড়ইগড়া, বারেকটিলা সীমান্ত রুটে ভারতীয় মাদক, গাঁজা, ভারতীয় সেখ নাসির বিড়ির, চিনি, পেয়াজ, কসমেটিকস, ফুসকা, কয়লা, গবাধিপশু (গরু, মহিষ, ঘোড়া, উঠ) চোরাচালানসহ সব ধরণের চোরাকারবারিদের সাথে গোপন সমঝোতায় দু’হাতে টাকা কামিয়েছেন নির্ব্রিগ্নে।
উপজেলার ঘাগটিয়া, ঘাগড়া, রাজারগাঁও, বিন্নাকুলির কয়েক নিরীহ হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা জানান, থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই বাচ্চু , জাদুকাটা নদীর পাড় কাটা, সেইভ ড্রেজার , বোমা মেশিনে বালি চুরি করে এমন কয়েকজন বালি লুটেরা কারবারি শফিক সর্দার, মাসুক সর্দা,কিরণ রায়,ইমামুল,জামাল,নায়িম উদ্দিন,এএসআই’র, ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল চালক (ড্রাইভার) বুলবুল সিকদার,শাহীন, জুনায়েদ সর্দার, শাহেনশাহ সহ জাদুকাটা নদীর দু’তীরে আরো একাধিক অবৈধ বালি কারবারির নিকট থেকে পুলিশের নামে লাখ লাখ টাকা প্রতিদিন চাঁদাবাজির পাশাপাশী গোপনে গোপনে গোপনে ওই সব বালি কারবারিদেও সাথে অবৈধ বালি ব্যবসায় পার্টনার (অংশীদার) হয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে , তাহিরপুর থানার বাদাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের টু-আইসি এএসআই বাচ্চু বলেন, আমি এসব অভিযোগের ব্যাপারে কিছুই জানিনা, এসব বিষয় আমার সিনিয়র অফিসারগণ বলতে পারবেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে, তাহিরপুর থানার একাধিক বারের সেকেন্ড অফিসার ও একাধিক ইউনিয়নের বিট অফিসার এসআই আহমেদুল আরেফিনের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ না করে অভিযোগের প্রেক্ষিতে বক্তব্য প্রদানের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে, তাহিরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হেলাল উদ্দিন বলেন, এসব বিষয়ে আমি কিছু জানিই না।