Sylhet 4:34 pm, Tuesday, 24 December 2024

আর মনে হয় কথা হবেনা জলদস্যুরা আমাদের জাহাজে ঢুকে পড়েছে

জলদস্যুরা আমাদের জাহাজে ঢুকে পড়েছে, আমার জন্য দোয়া কর। আর মনে হয় কথা হবে না’ এসব কথা স্ত্রী তানিয়া আক্তারকে বলেন সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া মো. রোকন উদ্দিন নামের একজন বাংলাদেশি প্রকৌশলী। এরপর তাঁদের মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে যায়।

ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। কেএসআরএম কোম্পানির এই জাহাজে রোকন উদ্দিনসহ ২৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক জলদস্যুদের হাতে জিম্মি রয়েছেন।

রোকন উদ্দিন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের তৃতীয় প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। তিনি নেত্রকোণা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের বাঘরুয়া গ্রামের মো. মিরাজ আলীর ছেলে। তাঁর জন্ম ১৯৯১ সালে। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তৃতীয় রোকন। মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষে ২০১৫ সালে জাহাজে চাকরি নেন তিনি। ২০২৩ সালের ২০ মার্চ ছুটিতে বাড়িতে এসে বিয়ে করেন তিনি। নভেম্বরে ছুটি শেষে চাকরিতে যোগ দেন রোকন। তাঁর স্ত্রী তানিয়া আক্তার অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ভারত মহাসাগরে এমভি আবদুল্লাহসহ ২৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে জিম্মি হওয়ার খবর প্রচারের পর রোকন উদ্দিনের বাড়িতে মাতম শুরু হয়। বিকেলে স্ত্রী তানিয়া আক্তারের সঙ্গে শুধুমাত্র একবার মোবাইল ফোনে কথা বলতে পেরেছেন রোকন। এ সময় তিনি ফোনে স্ত্রীকে বলেন, ‘জলদস্যুরা জাহাজে ঢুকে পড়েছে, আমার জন্য দোয়া করো, আর মনে হয় কথা হবে না’। এসব কথা বলার পর সংযোগ কেটে যায়।

এদিকে ছেলের জন্য কেঁদে কেঁদে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা লুৎফুন্নাহার। সেই সঙ্গে স্ত্রী তানিয়া আক্তারও বারবার কেঁদে উঠছেন।

রোকন উদ্দিনের বড় বোন শাহমিনা আক্তার এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘গতকাল বিকেলে রোকন তাঁর স্ত্রী তানিয়াকে মোবাইল ফোনে কল করে জানান জলদস্যুরা তাঁদের জাহাজে ঢুকে পড়েছে। এই খবর শোনার পর আমাদের বাড়িতে কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়। রাতেও রোকনের ফোন চালু ছিল। আমরা কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কল হচ্ছিল কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। এরপর থেকে আর কোনো খবর পাচ্ছি না।

শাহমিনা আক্তার বলেন, ‘রোকনের জিম্মি হওয়ার খবরে চিন্তায়-শঙ্কায় আমাদের পরিবারের সবার অবস্থা খুব খারাপ। বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। রোকন সুস্থভাবে ফিরে আসুক এটাই আমাদের একমাত্র দাবি। এ জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছি।’
রোকন উদ্দিনের বড় ভাই সাইদুর রহমানের স্ত্রী পপি আক্তার বলেন, ‘রোকন জলদস্যুদের কবলে পড়েছে এই কথা শোনার পর তার মা লুৎফন্নাহার বারবার কেঁদে জ্ঞান হারাচ্ছেন। এদিকে স্ত্রী তানিয়ারও একই অবস্থা। বাড়িতে কান্নাকাটি, কারও খাওয়া-দাওয়া ঘুম কিছুই নেই। আমরা খুব আতঙ্কে আছি তাঁকে (রোকন) নিয়ে।’

রোকন উদ্দিনের বড় ভাই সাইদুর রহমানের স্ত্রী পপি আক্তার বলেন, ‘রোকন জলদস্যুদের কবলে পড়েছে এই কথা শোনার পর তার মা লুৎফন্নাহার বারবার কেঁদে জ্ঞান হারাচ্ছেন। এদিকে স্ত্রী তানিয়ারও একই অবস্থা। বাড়িতে কান্নাকাটি, কারও খাওয়া-দাওয়া ঘুম কিছুই নেই। আমরা খুব আতঙ্কে আছি তাঁকে (রোকন) নিয়ে।’

About Author Information

SYLHET JOURNAL

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাতকে রেলওয়ের কংক্রিট স্লিপার প্লান্টে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

আর মনে হয় কথা হবেনা জলদস্যুরা আমাদের জাহাজে ঢুকে পড়েছে

প্রকাশের সময় : 10:13:44 pm, Wednesday, 13 March 2024

জলদস্যুরা আমাদের জাহাজে ঢুকে পড়েছে, আমার জন্য দোয়া কর। আর মনে হয় কথা হবে না’ এসব কথা স্ত্রী তানিয়া আক্তারকে বলেন সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া মো. রোকন উদ্দিন নামের একজন বাংলাদেশি প্রকৌশলী। এরপর তাঁদের মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে যায়।

ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। কেএসআরএম কোম্পানির এই জাহাজে রোকন উদ্দিনসহ ২৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক জলদস্যুদের হাতে জিম্মি রয়েছেন।

রোকন উদ্দিন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের তৃতীয় প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। তিনি নেত্রকোণা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের বাঘরুয়া গ্রামের মো. মিরাজ আলীর ছেলে। তাঁর জন্ম ১৯৯১ সালে। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তৃতীয় রোকন। মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষে ২০১৫ সালে জাহাজে চাকরি নেন তিনি। ২০২৩ সালের ২০ মার্চ ছুটিতে বাড়িতে এসে বিয়ে করেন তিনি। নভেম্বরে ছুটি শেষে চাকরিতে যোগ দেন রোকন। তাঁর স্ত্রী তানিয়া আক্তার অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ভারত মহাসাগরে এমভি আবদুল্লাহসহ ২৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে জিম্মি হওয়ার খবর প্রচারের পর রোকন উদ্দিনের বাড়িতে মাতম শুরু হয়। বিকেলে স্ত্রী তানিয়া আক্তারের সঙ্গে শুধুমাত্র একবার মোবাইল ফোনে কথা বলতে পেরেছেন রোকন। এ সময় তিনি ফোনে স্ত্রীকে বলেন, ‘জলদস্যুরা জাহাজে ঢুকে পড়েছে, আমার জন্য দোয়া করো, আর মনে হয় কথা হবে না’। এসব কথা বলার পর সংযোগ কেটে যায়।

এদিকে ছেলের জন্য কেঁদে কেঁদে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা লুৎফুন্নাহার। সেই সঙ্গে স্ত্রী তানিয়া আক্তারও বারবার কেঁদে উঠছেন।

রোকন উদ্দিনের বড় বোন শাহমিনা আক্তার এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘গতকাল বিকেলে রোকন তাঁর স্ত্রী তানিয়াকে মোবাইল ফোনে কল করে জানান জলদস্যুরা তাঁদের জাহাজে ঢুকে পড়েছে। এই খবর শোনার পর আমাদের বাড়িতে কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়। রাতেও রোকনের ফোন চালু ছিল। আমরা কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কল হচ্ছিল কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। এরপর থেকে আর কোনো খবর পাচ্ছি না।

শাহমিনা আক্তার বলেন, ‘রোকনের জিম্মি হওয়ার খবরে চিন্তায়-শঙ্কায় আমাদের পরিবারের সবার অবস্থা খুব খারাপ। বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। রোকন সুস্থভাবে ফিরে আসুক এটাই আমাদের একমাত্র দাবি। এ জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছি।’
রোকন উদ্দিনের বড় ভাই সাইদুর রহমানের স্ত্রী পপি আক্তার বলেন, ‘রোকন জলদস্যুদের কবলে পড়েছে এই কথা শোনার পর তার মা লুৎফন্নাহার বারবার কেঁদে জ্ঞান হারাচ্ছেন। এদিকে স্ত্রী তানিয়ারও একই অবস্থা। বাড়িতে কান্নাকাটি, কারও খাওয়া-দাওয়া ঘুম কিছুই নেই। আমরা খুব আতঙ্কে আছি তাঁকে (রোকন) নিয়ে।’

রোকন উদ্দিনের বড় ভাই সাইদুর রহমানের স্ত্রী পপি আক্তার বলেন, ‘রোকন জলদস্যুদের কবলে পড়েছে এই কথা শোনার পর তার মা লুৎফন্নাহার বারবার কেঁদে জ্ঞান হারাচ্ছেন। এদিকে স্ত্রী তানিয়ারও একই অবস্থা। বাড়িতে কান্নাকাটি, কারও খাওয়া-দাওয়া ঘুম কিছুই নেই। আমরা খুব আতঙ্কে আছি তাঁকে (রোকন) নিয়ে।’