জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের আবাসিক হলের একটি কক্ষ থেকে বহিরাগত এক যুবককে আটক করেছে হল কর্তৃপক্ষ। আটক যুবকের নাম আশরাফুল ইসলাম পারভেজ ওরফে যাযাবর পারভেজ। তিনি হিম উৎসবে ঘুরতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন।
১৮ জানুয়ারি (শনিবার) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক যাযাবর পারভেজের (৩১) বাড়ি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানায়। ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
হল কর্তৃপক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাত ১০টার দিকে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কপালে টিপ, প্লাজু পরে ঘোমটা দিয়ে প্রবেশ করে ওই যুবক। তার পোশাক ও হাঁটা দেখে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সন্দেহ হয়। পরে তারা হল সুপারকে বিষয়টি জানান। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে হল সুপার ওই নারী শিক্ষার্থীর কক্ষে গিয়ে অভিযুক্ত পারভেজকে দেখতে পান তারা। এরপর তাকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে আটক পারভেজকে শাড়ি ও টিপ পরিয়ে দেয় হলের ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পারভেজ বলেন, ‘আমরা দুইজন ভালো দোস্ত। সাত বছরের বন্ধুত্ব। দুজনেই লালন ভক্ত। তাকে আমি বিয়ে দিয়েছি। আমি হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছি। হলে আসার সময় আমি কপালে টিপ পরে মুখ ও শরীরে চাদরে মুড়িয়ে হলে প্রবেশ করি।’
অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা ভালো বন্ধু। হিম উৎসবে সে এসেছিল। রাতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে হলে নিয়ে এসেছি। আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।
অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীর স্বামীকে ফোন দিলে তিনি পারভেজকে চেনেন না বলে জানান। পরে পারভেজকে ওই নারী শিক্ষার্থী শুধু ফেসবুক বন্ধু বলে উল্লেখ করেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের হল সুপার নাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘হলের মেয়েরা ওই ছাত্রীর রুমে সেই পুরুষের উপস্থিতি টের পেয়ে আমাকে জানালে আমি হলের খালাকে নিয়ে রুমে যাই। দরজা খোলার পর আমি তাকে খাটের ওপরে বসে থাকা অবস্থায় দেখতে পাই। তৎক্ষনাৎ হল প্রভোস্টকে বিষয়টি জানাই।’
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হয়েছি। অভিযুক্তদের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম বলেন, খবর পাওয়ার পর প্রক্টরিয়াল টিমকে পাঠাই। আটক ছেলেকে পুলিশে দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীকে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।