রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটে অপরাধ নিয়ন্ত্রনে ‘হার্ডলাইনে’ পুলিশ : দেড়শতাধিক গ্রে ফ তা র

সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করে সিলেটজুড়ে বেড়ে যায় অপরাধ প্রবণতা। যা নিয়ে রিতিমতো আতঙ্কে ছিলেন নগরবাসীর। বিশেষ করে  চুরি, ডাকাতির ভয়ে মানুষের নির্ঘুম রাত কেটেছে পাহারা দিয়ে। চুর, ডাকাত আর ছিনতাইকারীদের উৎপাতে রাত বাড়লেই বাড়তো আতঙ্ক।

 

 

 

তবে পুলিশের লাগাতার অভিযানে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে। সিলেট মহানগরে অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত নভেম্বর থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ মাসের সময়ে নগরীতে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় পুলিশ ১৪১টি মামলা রুজু করেছে। এসব মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ১৬৮ জনকে। এসএমপি জানায়, চুরি, ছিনতাই, হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ ও ডাকাতির মতো অপরাধ দমনে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে তারা এ সফলতা পেয়েছে। অভিযানকালে উদ্ধার করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আলামত, বিভিন্ন যানবাহন, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ এবং চুরি যাওয়া বিভিন্ন সামগ্রী।

 

সূত্র জানায়, গত সাড়ে ৫ মাসে চুরি সংক্রান্ত মামলা হয়েছে ৬৭টি। এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ৭৯ জন। উদ্ধার হয়েছে তিনটি মোটরসাইকেল, তিনটি সিএনজি অটোরিকশা, একটি বাইসাইকেল, কী বোর্ড ও মাদারবোর্ডসহ প্রযুক্তিপণ্য, ফার্মেসি ও বাজারজাত দ্রব্য, স্বর্ণালঙ্কার, দুধ, তেল, সাবান, এনআইডি কার্ড, এটিএম কার্ড, চাবি, ফ্যান, ব্যাটারি, গরু ও ছাগলসহ নানা সামগ্রী। শুধু চুরি সংক্রান্ত মামলাগুলো থেকেই উদ্ধার হয়েছে নগদ ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৪৫০ টাকা।

 

 

একই সময়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৩২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৫২ জনকে। উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি সিএনজি, তিনটি মোটরসাইকেল, একটি প্রাইভেটকার, তিনটি মোবাইল ফোন, ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি শিকল এবং নগদ ২ লাখ ৫৩ হাজার ২০০ টাকা।

 

 

এছাড়া, ছয়টি হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

আর অপহরণের ঘটনায় দায়ের হওয়া পাঁচটি মামলায় গ্রেফতার হয়েছে তিনজন এবং উদ্ধার করা হয়েছে দুইজন ভিকটিম।

 

 

গত কয়েক মাসে ধর্ষণজনিত অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে ছিলো বাড়তি উদ্বেগ। পুলিশ জানায়, এই সময়ে ধর্ষণের ঘটনায় ২৯টি মামলা রুজু হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ১৬ জনকে। একটি মামলায় একজন ভিকটিমকেও উদ্ধার করা হয়েছে।

মেট্রোপলিটন এলাকায় ডাকাতির আতঙ্কও ছিল বেশ প্রবল। এ সময় ডাকাতির ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছে এবং এতে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে একটি মোবাইল ফোন।

 

 

এসএমপি সূত্রে জানা গেছে, এসব মামলায় গ্রেফতার হওয়া অনেকেই চিহ্নিত অপরাধী। তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই রয়েছে পূর্বের একাধিক মামলা। পুলিশ বলছে, অভিযানকালে উদ্ধার হওয়া আলামতগুলো তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এনে দিয়েছে।

 

 

এসএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আফজাল হোসেন সিলেটভিউ-কে জানান, নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশের এমন কঠোর ভূমিকা নগরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও আস্থার পরিবেশ তৈরি করেছে বলেও জানান তিনি।